https://eeraboti.cloud/uploads/images/ads/Trust.webp
Breaking News

চুল কি একেবারে চিপসে থাকে? চুলে ভলিউম বা ফোলা ভাব আনার দারুণ সব টিপস এবং স্টাইলিং হ্যাকস

top-news
  • 03 Dec, 2025
https://eeraboti.cloud/uploads/images/ads/eporichoy.webp

ফ্ল্যাট হেয়ার বা চিপসে যাওয়া চুলের বিড়ম্বনা

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমাদের অনেকেরই একটা সাধারণ অভিযোগ থাকে—"চুলটা কেমন যেন নেতিয়ে আছে।" আপনি হয়তো খুব সুন্দর করে সেজেছেন, পরনে দামী শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ, কিন্তু আয়নায় তাকালে দেখলেন মাথার ওপর চুলগুলো একদম লেপটে আছে। মনটাই খারাপ হয়ে যায়, তাই না? বিশেষ করে আমাদের দেশের আর্দ্র আবহাওয়া (Humidity), ধুলোবালি এবং গরমে ঘেমে যাওয়ার কারণে চুল তার স্বাভাবিক ফোলানো ভাব বা 'ভলিউম' হারিয়ে ফেলে।

এশীয়দের চুল সাধারণত একটু ভারী এবং সোজা হয়। এর ওপর যদি স্ক্যাল্প বা মাথার ত্বক তৈলাক্ত হয়, তবে শ্যাম্পু করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চুল চিপসে যায়। কিন্তু চিন্তার কিছু নেই। চুল পাতলা হোক বা ঘন, সঠিক যত্ন আর কিছু স্মার্ট স্টাইলিং টেকনিক জানা থাকলে আপনিও পেতে পারেন বাউন্সি, ফোলানো এবং প্রাণবন্ত চুল। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা একদম গোড়া থেকে আলোচনা করব কীভাবে চুলে ভলিউম আনা যায়, যা আপনার লুকটাই বদলে দেবে।

কেন চুল চিপসে যায়? আসল কারণগুলো কী?

সমস্যা সমাধানের আগে কারণ জানা জরুরি। আমাদের দেশে চুল ফ্ল্যাট হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো:
১. অতিরিক্ত সিবাম বা তেল: আমাদের স্ক্যাল্প থেকে প্রাকৃতিক তেল বা সিবাম বের হয়। যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তাদের এই তেল চুলের গোড়ায় জমে চুলকে ভারী করে দেয়।
২. ভুল প্রোডাক্ট ব্যবহার: এমন শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার ব্যবহার করছেন যা আপনার চুলের ধরনের সাথে মানানসই নয়। অতিরিক্ত সিলিকনযুক্ত প্রোডাক্ট চুলকে সিল্কি করতে গিয়ে ভারী করে ফেলে।
৩. পানির মান: ঢাকার অনেক এলাকায় পানিতে আয়রন বা ক্লোরিন বেশি থাকে, যা চুলে বিল্ড-আপ তৈরি করে চুলকে নিস্তেজ করে দেয়।
৪. হেয়ার কাট: চুল খুব বেশি লম্বা হলে তার নিজের ওজনেই তা নিচের দিকে ঝুলে পড়ে, ফলে গোড়ার দিকে চ্যাপ্টা দেখায়।
৫. লাইফস্টাইল: যারা হিজাব পরেন, দীর্ঘক্ষণ চুল বেঁধে রাখার ফলে বা কাপড়ের চাপে চুল ভলিউম হারায়।

১. গোসলের রুটিনে পরিবর্তন: ভলিউমের প্রথম ধাপ

চুলের ভলিউম বাড়ানোর কাজটা শুরু হয় বাথরুম থেকেই।

  • ডাবল শ্যাম্পু মেথড: একবার শ্যাম্পু করলে অনেক সময় তেল আর ধুলোবালি পুরোপুরি যায় না। প্রথমে একবার শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন, এরপর দ্বিতীয়বার অল্প শ্যাম্পু নিয়ে ম্যাসাজ করুন। এতে স্ক্যাল্প একদম পরিষ্কার হবে এবং চুলের গোড়া হালকা হয়ে ফুলে উঠবে।

  • রিভার্স ওয়াশিং (Reverse Washing): যাদের চুল খুব পাতলা, তারা কন্ডিশনার আগে ব্যবহার করে দেখতে পারেন। চুলে পানি দিয়ে আগে কন্ডিশনার লাগান, ২ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন, তারপর শ্যাম্পু করুন। এতে চুল ময়েশ্চার পাবে কিন্তু কন্ডিশনারের ভারে নুয়ে পড়বে না।

  • কন্ডিশনারের সঠিক ব্যবহার: কন্ডিশনার কখনোই চুলের গোড়ায় লাগাবেন না। এটি কেবল চুলের মাঝখান থেকে আগা পর্যন্ত লাগাতে হয়। গোড়ায় লাগালে চুল নিশ্চিতভাবে চিপসে যাবে।

২. চুল শুকানোর সঠিক নিয়ম (The Blow-Dry Hack)

সেলুনে ব্লো-ড্রাই করলে চুল কত সুন্দর ফোলা দেখায়, আর বাসায় করলে কেন হয় না? এর গোপন রহস্য হলো বাতাস প্রবাহের দিক।

  • মাথা নিচু করে শুকানো (Upside Down Drying): এটি সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী উপায়। ভেজা চুল শুকানোর সময় মাথা সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে উল্টো করে হেয়ার ড্রায়ার চালান। চুলের গোড়াগুলো উল্টো দিকে শুকানোর ফলে যখন আপনি মাথা সোজা করবেন, তখন দেখবেন চুলে অদ্ভুত এক ভলিউম এসেছে।

  • ঠান্ডা বাতাসের ঝাপটা: ড্রায়ার দিয়ে গরম বাতাসে চুল শুকানোর পর শেষ ১ মিনিট 'কুল শট' বা ঠান্ডা বাতাস ব্যবহার করুন। এটি চুলের স্টাইলকে সেট করতে এবং ভলিউম ধরে রাখতে সাহায্য করে।

৩. হেয়ার কাট ও স্টাইলিং: জাদুর মতো পরিবর্তন

আপনার চুলের কাটিং যদি সঠিক না হয়, তবে ভলিউম আনা কঠিন।

  • লেয়ার কাট (Layers): সোজা সমান কাটের (Blunt cut) বদলে চুলে লেয়ার বা ভাজ থাকলে চুল হালকা হয় এবং বাউন্সি দেখায়। ফেস ফ্রেমিং লেয়ার বা মাল্টি-লেয়ার এশীয় গোল বা ওভাল মুখে খুব ভালো মানায়।

  • সিঁথি পরিবর্তন করা: বছরের পর বছর একই দিকে সিঁথি করলে ওই জায়গার চুল বসে যায়। মাঝেমধ্যে সিঁথি ডান থেকে বামে বা জিগজ্যাগ করে নিন। দেখবেন সাথে সাথে চুল অনেকটা ফুলেল দেখাচ্ছে।

৪. ড্রাই শ্যাম্পু: ব্যস্ত জীবনের বন্ধু

আমাদের দেশের গরমে চুল ঘামবেই। আর ঘামলে চুল চিপসে যাবে। এর তাৎক্ষণিক সমাধান হলো 'ড্রাই শ্যাম্পু' (Dry Shampoo)। এটি একটি স্প্রে বা পাউডার যা চুলে পানি ছাড়াই ব্যবহার করা যায়।

  • ব্যবহারের নিয়ম: চুলের গোড়ায় ৬ ইঞ্চি দূর থেকে স্প্রে করুন। ২ মিনিট অপেক্ষা করুন যাতে এটি তেল শুষে নিতে পারে। এরপর আঙুল দিয়ে ম্যাসাজ করে চুল আঁচড়ে নিন। এটি কেবল তেল দূর করে না, চুলের গোড়ায় দারুণ টেক্সচার ও ভলিউম যোগ করে। বাংলাদেশে এখন ভালো মানের ড্রাই শ্যাম্পু পাওয়া যায়।

৫. ঘরোয়া টোটকা ও মাস্ক

রাসায়নিক প্রোডাক্টের বাইরে ঘরোয়া উপাদানেও চুল ফোলানো সম্ভব।

  • অ্যালোভেরা জেল ও লেবু: তাজা অ্যালোভেরা জেল ব্লেন্ড করে তাতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে স্ক্যাল্পে লাগান। এটি স্ক্যাল্পের অতিরিক্ত তেল ও ময়লা দূর করে চুলকে ঝরঝরে করে।

  • ডিমের সাদা অংশ: ডিমে প্রচুর প্রোটিন থাকে যা চুলের গঠন মজবুত করে। শুধু ডিমের সাদা অংশ ফেটিয়ে চুলে লাগালে চুল শক্ত হয় এবং দেখতে ঘন লাগে।

৬. টিজিং বা ব্যাককোম্বিং (Backcombing)

পার্টিতে যাওয়ার আগে চুলে ইনস্ট্যান্ট ফোলা ভাব আনতে এই টেকনিকটি পুরনো কিন্তু কার্যকরী।

  • মাথার উপরের অংশের চুলের কিছু গোছা নিন।

  • চিকন দাঁতের চিরুনি দিয়ে আগা থেকে গোড়ার দিকে (উল্টোভাবে) আঁচড়ান।

  • এতে চুলের গোড়ায় একটি জট পাকানো বেস তৈরি হয় যা চুলকে উঁচু করে রাখে।

  • ওপর দিয়ে আলতো করে আঁচড়ে দিলেই পারফেক্ট পাফ তৈরি হবে। তবে এটি প্রতিদিন করবেন না, এতে চুল ছিঁড়ে যেতে পারে।

৭. হিজাব ও চুল

আমাদের দেশের অনেক নারী হিজাব পরেন। হিজাবের নিচে চুল দীর্ঘক্ষণ থাকলে তা চ্যাপ্টা হয়ে যায়।

  • হিজাব খোলার পর চুল উল্টো করে ঝেড়ে নিন।

  • হাতের আঙুল দিয়ে চুলের গোড়া ম্যাসাজ করুন।

  • সিল্ক বা সাটিনের স্কার্ফ ব্যবহার করুন, এতে ঘর্ষণ কম লাগে এবং চুল ভালো থাকে।

  • খুব শক্ত করে চুল বাঁধবেন না, এতে 'ট্র্যাকশন অ্যালোপেশিয়া' বা চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে।

৮. সঠিক পণ্য নির্বাচন: কী কিনবেন আর কী কিনবেন না

বাজারে 'Volumizing' লেখা শ্যাম্পু পাওয়া যায়। এগুলো সাধারণ শ্যাম্পুর চেয়ে হালকা হয় এবং চুলে কোনো আস্তরণ ফেলে না। ভারী অয়েল বা বাটার বেসড শ্যাম্পু এড়িয়ে চলুন। সিরাম বা হেয়ার অয়েল ব্যবহারের সময় খুব অল্প পরিমাণে নিন এবং ভুলেও স্ক্যাল্পে লাগাবেন না।

৯. ডায়েট ও ভেতর থেকে যত্ন

বাইরের যত্ন তখনই কাজে আসবে যখন ভেতর থেকে আপনি সুস্থ থাকবেন। চুল পাতলা হয়ে যাওয়া অনেক সময় আয়রন বা ভিটামিনের অভাবের লক্ষণ।

  • প্রচুর পানি পান করুন।

  • বায়োটিন, জিঙ্ক এবং ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার (যেমন—ছোট মাছ, বাদাম, ডিম) খান।

  • অতিরিক্ত চিনি খাওয়া কমিয়ে দিন, কারণ এটি স্ক্যাল্পে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।

উপসংহার

চুলে ভলিউম আনা কোনো রকেট সায়েন্স নয়, এটি মূলত সঠিক যত্ন আর কৌশলের খেলা। আপনার চুল যেমনই হোক—সোজা, কোঁকড়া বা ঢেউ খেলানো—ওপরের টিপসগুলো মেনে চললে আপনিও পেতে পারেন সেই কাঙ্ক্ষিত বাউন্সি লুক। নিজের চুলের ধরন বুঝুন এবং সেই অনুযায়ী প্রোডাক্ট ও রুটিন সেট করুন। মনে রাখবেন, আত্মবিশ্বাসই আসল সৌন্দর্য, আর সুন্দর চুল সেই আত্মবিশ্বাসকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

তবে সাবধান! চুলে ভলিউম আনতে গিয়ে সস্তা বা নকল প্রোডাক্ট ব্যবহার করে চুলের ক্ষতি করবেন না। বাংলাদেশে এখন নকল কসমেটিকসের ছড়াছড়ি। আপনার চুলের স্বাস্থ্যের জন্য চাই ১০০% অরিজিনাল প্রোডাক্ট।

বিশ্বস্ত কেনাকাটার ঠিকানা: TrustShopBD

আপনার চুলের ভলিউম বাড়াতে প্রয়োজনীয় ভলিউমাজিং শ্যাম্পু, ড্রাই শ্যাম্পু (যেমন Batiste), হেয়ার মুজ বা অরিজিনাল হেয়ার ড্রায়ার ও স্টাইলিং টুলস কিনতে ভিজিট করুন **TrustShopBD (www.trustshopbd.com)**। আমরা নিশ্চিত করি অথেনটিক ইউকে, ইউএসএ এবং কোরিয়ান প্রোডাক্ট। নকলের ভিড়ে আপনার চুলের সুরক্ষায় আমরাই আপনার ভরসা। আজই অর্ডার করুন এবং আপনার ফ্ল্যাট হেয়ারকে বলুন গুডবাই!

https://eeraboti.cloud/uploads/images/ads/Genus.webp

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *